
বরিশাল খবর অনলাইন নিউজ : টেন্ডার ছাড়াই আমতলী পৌর প্রশাসক মোঃ রোকনুজ্জামান খাঁন পৌরসভার ৭ হাজার খানা প্লেট তৈরি করতে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নাম সর্বস্ব দেশ মঙ্গল পরিবেশ উন্নয়ন ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে তিনি এ কাজ করিয়েছেন। ওই প্রতিষ্ঠানের লোকজন বাড়ী বাড়ী গিয়ে স্বাক্ষর ছাড়াই রশিদ দিয়ে ৫০ টাকার প্লেটে ১৫০ টাকা আদায় করছেন। এতে পৌরবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। দ্রত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন তারা। এ বিষয়ে আমতলী পৌরসভা নির্বাহী কর্মকর্তা (পৌর সচিব) রফিকুল ইসলাম ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ একে অন্যকে দোষারোপ করছেন। কিন্তু উভয় কর্মকর্তা পৌর প্রশাসক মোঃ রোকনুজ্জামান খাঁন করেছেন বলে স্বীকার করেছেন।
জানাগেছে, ১৯৯৮ সালে আমতলী পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করা হয়। পৌরসভায় অর্ধ লাখ মানুষের বসবাস। প্রথম শ্রেনীর পৌরসভায় ৭ হাজার পরিবার বসবাস করছেন। এ বছর এপ্রিল মাসে ওই পরিবারগুলোর জন্য খানা প্লেট নির্মাণের উদ্যোগ নেয় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। ওই সময় খানা প্লেট প্রতি ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয় । ওই সময় টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে টাকা প্লেট তৈরি সিদ্ধাকন্ত হয়। গত ১৩ মে পৌর প্রশাসক হিসেবে ইউএনও মোঃ রোকনুজ্জামান খাঁন দায়িত্ব পান। তিনি টেন্ডার ছাড়াই এ খানা প্লেট তৈরিতে ১৫০ টাকা নির্ধারণ করেছেন। ওই খানা প্লেট তৈরি করতে সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে নাম সর্বস্ব দেশ মঙ্গল পরিবেশ উন্নয়ন ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিয়েছেন। ওই প্রতিষ্ঠানের লোকজন গত ১৫ দিন ধরে বাড়ী বাড়ী গিয়ে স্বাক্ষর বিহীন ১৫০ টাকার রশিদ দিয়ে টাকা আদায় করছেন। এতে পৌরবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাদের অভিযোগ পৌর নাগরিক হিসেবে যথাযথভাবে পৌর কর দিয়ে আসছি। এরপর খানা প্লেট তৈরিকে কেন টাকা দেব ? তারা আরো অভিযোগ করেন, গত ছয় মাস আগে ৫০ টাকা ধার্য্য করেছিল। ওই একই খানা প্লেট কেন ১৫০ টাকা ধার্য্য হবে?। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার কয়েকজন কর্মচারী বলেন, পৌর প্রশাসক মোঃ রোকনুজ্জামান খাঁন ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মামুনুর রশিদের একক সিদ্ধান্তে কোন টেন্ডার ও রেজুলেশন ছাড়াই প্লেট তৈরি করতে নাম সর্বস্ব দেশ মঙ্গল পরিবেশ উন্নয়ন ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তারা বাড়ী বাড়ী গিয়ে ১৫০ টাকার আদায় করছেন। তারা আরো বলেন, ছয় মাস আগে প্লেট প্রতি ৫০ টাকা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
আমতলী পৌরসভার মাজার রোডের মিজানুর রহমান তালুকদার ও মন্নান বয়াতি বলেন, ৫০ টাকার খানা প্লেট তৈরিতে স্বাক্ষর বিহীন ১৫০ টাকার রশিদ দিয়ে টাকা আদায় করছেন। দ্রত তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তারা।
সবুজবাগ এলাকার গাজী ইউসুফ, সৈয়দ নজির আহম্মেদ ও নিলুফার ইয়াসমীন বলেন, পৌরসভার লোকজন বাড়ী বাড়ী গিয়ে ১৫০ টাকা আদায় করছেন। টাকা দিলে তারা প্লেট দিয়ে যায়। তারা আরো বলেন, এই প্লেটের টাকা আমাদের দেয়ার কথা না। কেননা আমরা পৌর নাগরিক হিসেবে সকল কর পরিশোধ করেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবী জানান তারা।
দেশ মঙ্গল পরিবেশ উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের মালিক দেলোয়ার আকন বলেন, পৌর প্রশাসক মোঃ রোকনুজ্জামান খাঁন আমাকে প্লেট তৈরি করতে অনুমতি দিয়েছেন। তাই আমি প্লেট তৈরি করছি। আমতলী পৌর প্রশাসনিক কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। পৌর প্রশাসক ও পৌর সচিব তারাই সব করেছেন।
আমতলী পৌর সচিব মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, পৌর প্রশাসক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ তারা কিভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে করেছেন তা আমার জানা নেই।
সম্পাদক ও সিইও: মামুনুর রশীদ নোমানী
বরিশাল খবর অফিস: সিএন্ডবি রোড, বরিশাল
ইমেইল: nomanibsl@gmail.com
মোবাইল: 01713799669 / 01712596354
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি
© বরিশাল খবর সর্বস্ব সংরক্ষিত